ঢাকা ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুন্দরগঞ্জে জামায়াত কর্মী হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পর থানায় মামলা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:০৪:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • ২৩ Time View

হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে জামায়াত কর্মী শাহাবুল ইসলাম (৩৮) হত্যাকান্ডের ঘটনায় ১০ বছর পর পরিবারের পক্ষ হতে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার শাহাবুলের ছোট ভাই এসএম শাহাজান বাদী হয়ে ৭৯ জন নেতাকর্মীর নামসহ আরও ৪০ হতে ৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় প্রয়াত সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের স্ত্রী ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি খুরশীদ জাহান স্মৃতিকে ১ নং আসামি করা হয়েছে। শাহাবুল উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনমথ গ্রামের শেখ খিজির উদ্দিনের ছেলে।

পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার শিমুলতলী গ্রামের মনমথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যায় জামায়াত কর্মী শাহাবুল ইসলাম ও প্রতিবেশি মিজানুর রহমান।

এ সময় ভোট কেন্দ্রের বাইরে কিছু সংখ্যক দুর্বৃত্ত শাহাবুল ও মিজানুরকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদেরকে মারপিঠ শুরু করে। প্রাণ ভয়ে শাহাবুল ও মিজানুর ভোটকেন্দ্র হতে পালানোর চেষ্টা করলে এজাহার নামিও আসামিগণ এবং দুর্বৃত্তরা উভয়কে ছুরি দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে কর্তবরত চিকিৎসক শাহাবুলকে মৃত্যু ঘোষনা করে এবং মিজানুরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেই সময় পরিবারের লোকজন মামলা করার চেষ্টা চালিয়ে দলীয় প্রভাবের কারণে ব্যর্থ হন।

মামলার বাদী এস এম শাহজাহান জানান, ঘটনার সময় আওয়ামীলীগের প্রভাবের কারণে ও প্রাণনাশের ভয়ে আদালতে এবং থানায় মামলা করতে পারি নাই। সে কারণে ১০ বছর পর দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় বড় ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি মামলাটি করা হয়েছে। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে ন্যায় বিচার দাবি করছেন।

উপজেলা জামায়াতের আমির মো. শহিদুল ইসলাম মঞ্জু জানান, মামলা করার বিষয়টি ভূক্তভোগি পরিবারের একান্ত সিদ্ধান্ত। তবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি যেন ন্যায় বিচার পান সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো. সেলিম রেজা জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক মামলার এজাহারটি রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার এজাহারে ৭৯ জন আসামির নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া ৪০ হতে ৫০ অজ্ঞতানাম আসামি রয়েছে। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধিকে আইনের আওতায় সোপর্দ করা হবে। মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই আশাদুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করবেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।

উল্লেখ্য ২০১৪ সালের ওই নিবার্চনে গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রয়াত মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে ৩১ ডিসেম্বর উপজেলার উত্তর সাহাবাজ গ্রামের নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে সাংসদ লিটন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

নাঃগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচনে প্রার্থী হলেন আলহাজ্ব  সোহাগ

সুন্দরগঞ্জে জামায়াত কর্মী হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পর থানায় মামলা

Update Time : ০৯:০৪:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে জামায়াত কর্মী শাহাবুল ইসলাম (৩৮) হত্যাকান্ডের ঘটনায় ১০ বছর পর পরিবারের পক্ষ হতে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার শাহাবুলের ছোট ভাই এসএম শাহাজান বাদী হয়ে ৭৯ জন নেতাকর্মীর নামসহ আরও ৪০ হতে ৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় প্রয়াত সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের স্ত্রী ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি খুরশীদ জাহান স্মৃতিকে ১ নং আসামি করা হয়েছে। শাহাবুল উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনমথ গ্রামের শেখ খিজির উদ্দিনের ছেলে।

পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার শিমুলতলী গ্রামের মনমথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যায় জামায়াত কর্মী শাহাবুল ইসলাম ও প্রতিবেশি মিজানুর রহমান।

এ সময় ভোট কেন্দ্রের বাইরে কিছু সংখ্যক দুর্বৃত্ত শাহাবুল ও মিজানুরকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদেরকে মারপিঠ শুরু করে। প্রাণ ভয়ে শাহাবুল ও মিজানুর ভোটকেন্দ্র হতে পালানোর চেষ্টা করলে এজাহার নামিও আসামিগণ এবং দুর্বৃত্তরা উভয়কে ছুরি দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করালে কর্তবরত চিকিৎসক শাহাবুলকে মৃত্যু ঘোষনা করে এবং মিজানুরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেই সময় পরিবারের লোকজন মামলা করার চেষ্টা চালিয়ে দলীয় প্রভাবের কারণে ব্যর্থ হন।

মামলার বাদী এস এম শাহজাহান জানান, ঘটনার সময় আওয়ামীলীগের প্রভাবের কারণে ও প্রাণনাশের ভয়ে আদালতে এবং থানায় মামলা করতে পারি নাই। সে কারণে ১০ বছর পর দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় বড় ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি মামলাটি করা হয়েছে। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে ন্যায় বিচার দাবি করছেন।

উপজেলা জামায়াতের আমির মো. শহিদুল ইসলাম মঞ্জু জানান, মামলা করার বিষয়টি ভূক্তভোগি পরিবারের একান্ত সিদ্ধান্ত। তবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারটি যেন ন্যায় বিচার পান সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।

থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত মো. সেলিম রেজা জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশনা মোতাবেক মামলার এজাহারটি রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার এজাহারে ৭৯ জন আসামির নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া ৪০ হতে ৫০ অজ্ঞতানাম আসামি রয়েছে। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধিকে আইনের আওতায় সোপর্দ করা হবে। মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই আশাদুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করবেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত কোন আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।

উল্লেখ্য ২০১৪ সালের ওই নিবার্চনে গাইবান্ধা-১ সুন্দরগঞ্জ আসনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রয়াত মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে ৩১ ডিসেম্বর উপজেলার উত্তর সাহাবাজ গ্রামের নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে সাংসদ লিটন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।